পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন বিকর্ণ দাশ দিব্য এবং প্রণয় কুণ্ডু। তারা ১৪ মার্চ রাতে ফেসবুকে ইসলাম ধর্ম অবমাননা করে পোস্ট ও মন্তব্য করেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্তের পর ১৬ মার্চ তাদের সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামান খান জানান, দুই শিক্ষার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়, কিন্তু তাদের জবাব সন্তোষজনক হয়নি। পরবর্তীতে ডিসিপ্লিন বোর্ডের জরুরি সভায় তাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়।
এ ঘটনায় ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন এবং তাদের দ্রুত বহিষ্কারের দাবি জানান। বিক্ষোভের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক ও প্রশাসনিক ভবনে তালা মেরে অবস্থান নেওয়া হয়। প্রক্টরিয়াল বডি শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করে, তবে তারা সাত শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের দাবি জানান।পরে, দুপুর আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর দুই শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কারের ঘোষণা দেন। তিনি আরও জানান, ফার্মেসি বিভাগের পাঁচ শিক্ষার্থীর বিষয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এদিকে, সনাতন শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, তাদের মেসেঞ্জার গ্রুপের কথোপকথন ফাঁস করা হয়েছে। একটি মেয়ে শিক্ষার্থী তার মুসলিম বয়ফ্রেন্ডের আইডি থেকে স্ক্রিনশট ফাঁস করেছেন, যা তাদের বিপক্ষে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলেছে। তারা প্রশাসনের কাছে সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে বিতর্কিত এবং সংবেদনশীল বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্যক্তিগত মতামতকে ধর্ম অবমাননা হিসেবে উপস্থাপন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করা হয়, যা সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে।
ফেসবুক পোস্ট হলো প্রোফাইল বা পেজে একটি সর্বজনীন ঘোষণা, যা আপনার বন্ধু / অনুসারীরা দেখতে পাবেন। অন্যদিকে মেসেঞ্জার গ্রুপ পোস্ট হলো একটি গ্রুপ চ্যাটের মধ্যে একটি ব্যক্তিগত বার্তা, যা শুধুমাত্র গ্রুপের সদস্যরা দেখতে পাবেন। গ্রুপ চ্যাট হলো মেসেঞ্জারে একাধিক ব্যক্তির সাথে কথোপকথন, যেমন বন্ধু এবং পরিবার। ফেইসবুক সার্বজনীন কিন্তু ম্যাসেঞ্জারের বার্তা নিতান্তই ব্যাক্তিগত। যে কোন ব্যাক্তিগত বার্তাকে সামনে এনে মিছিল- মিটিং মব সৃষ্টি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য বাঁধা। নিকট অতীতে হিন্দু ধর্মের অনেককে কথিত ধর্ম অবমাননার অপরাধে বিনা বিচারে জেলে ঢুকানো হয়েছে।
প্রাথিমিক সূত্র: কালের কণ্ঠ, ১৬ মার্চ ২০২৫।