বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০৭ অপরাহ্ন

ইয়ে ইনকিলাব ঝুটা হায় ! ঈদের আগেও শ্রমিকদের বেতন-বোনাস অনিশ্চিত

সমসমাজ ডেস্ক
শনিবার, ২৯ মার্চ, ২০২৫

ঈদকে সামনে রেখেও দেশের হাজার হাজার পোশাক শ্রমিক এখনো মার্চ মাসের বেতন ও ঈদ বোনাস পাননি। শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে আজ শ্রম ভবনে অনুষ্ঠিত আলোচনায় শ্রম সচিব জানিয়েছেন, ঈদের আগে মাত্র তিন কোটি টাকা পরিশোধ করা সম্ভব। বাকি অর্থ ঈদের পরে ৮ এপ্রিলের সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ব্যাংক বন্ধ থাকায় মালিকদের সরকারি ঋণ দেওয়া যায়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি।বেতন বকেয়া রাখায় ইতোমধ্যে টিএনজেড গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহীনকে শ্রম মন্ত্রণালয়ের হেফাজতে রাখা হয়েছে। তবে শ্রমিকরা বলছেন, এই ‘হেফাজত’ কার্যত লোক দেখানো। শ্রমিক নেতাদের অভিযোগ, সরকারি কর্মকর্তারা এসি ঘরে আরামে ঈদ উদযাপন করবেন, আর শ্রমিকরা না খেয়ে রাস্তায় দিন কাটাবেন।

শনিবার শ্রম ভবনে আলোচনায় টিএনজেড গ্রুপের তিন কারখানা থেকে ১৫ জন শ্রমিক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। আলোচনার শুরুতেই মালিকপক্ষ জানায়, তাদের কাছে ১৬ কোটি টাকা নেই। সচিবও জানিয়ে দেন, শ্রম মন্ত্রণালয়ের হাতে কোনো তহবিল নেই। শ্রমিকদের ক্রমাগত চাপের মুখে প্রথমে দুই কোটি টাকা দেওয়ার কথা বলেন সচিব, পরে শ্রমিকদের বিক্ষোভের মুখে তা বাড়িয়ে তিন কোটি করা হয়। তবে এই তিন কোটি টাকা দিয়ে ৩১৬৬ জন শ্রমিকের প্রত্যেকের ভাগ্যে মাত্র ৯ হাজার টাকা করে পড়ছে, যা এক মাসের মজুরিরও সমান নয়। শ্রম সচিবের আচরণে শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। আলোচনার সময় সচিব মালিকপক্ষের অসুস্থতার কথা উল্লেখ করলেও শ্রমিকদের অসুস্থতা নিয়ে ছিলেন উদাসীন। এর প্রতিবাদে শ্রমিকরা সচিবের গাড়ি অবরোধ করেন। পরে সচিব তিন কোটি টাকা দেয়ার ঘোষণা দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

এদিকে শ্রমিকরা অভিযোগ করেছেন, মূল গণমাধ্যমগুলো শ্রমিকদের ভুখা মিছিলের খবর এড়িয়ে গিয়ে সরকারের পক্ষে ইতিবাচক সংবাদ প্রচার করছে। এমনকি বেসরকারি টেলিভিশনগুলোকে মালিকপক্ষের পক্ষে মিথ্যা তথ্য প্রচার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। সরকারের তথাকথিত ‘ফ্যাক্ট চেক’ ব্যবস্থাও শ্রমিকদের দুর্দশা আড়াল করছে বলে দাবি করেন শ্রমিক নেতারা।
শ্রমিকদের দাবি, শ্রম উপদেষ্টা তাদের বকেয়া বেতন পরিশোধের ব্যাপারে মিডিয়ায় মিথ্যা বলেছে। এই তথ্য কি পিআইবির ফ্যাক্ট চেক ব্যবস্থা দিয়ে চেক করা যায় যে, আসলে কে মিথ্যা বলছে— শ্রমিকরা নাকি উপদেষ্টা?

এমন পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলোর নিষ্ক্রিয়তার সমালোচনা করে শ্রমিকরা বলেছেন, বড় দলগুলো মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ভূমিকা নিচ্ছে না। শ্রমিকদের দাবি, শ্রম আইন সংস্কার করে তিন মাস বেতন-বোনাস না দিলে মালিকদের বিরুদ্ধে সরাসরি আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান করতে হবে।


একই ঘরনার সংবাদ
error: Content is protected !!
error: Content is protected !!